অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মিয়ানমারে দারিদ্র্য গত ছয় বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় আরো গভীর হয়েছে এবং গৃহযুদ্ধকবলিত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে মাত্র এক শতাংশেই আটকে থাকবে বলে আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। খবর রয়টার্সের।
বুধবার এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, কর্মী ঘাটতি ও মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে দেশটিতে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে গেছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের অর্থনীতি টালমাটাল হওয়া শুরু হয়। গত অর্থবছরে মিয়ানমারের জিডিপি ১ শতাংশ বাড়বে এমন হিসাবের পর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে প্রায় ২ শতাংশের মতো হবে বলে ডিসেম্বরে আভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। ২০২৪-এর মার্চে গত অর্থবছর শেষ হয়েছে।
জুনের প্রতিবেদেন ব্যাংকটি বলেছে, ‘২০২৪/২৫ অর্থবছরের জন্য নিম্নগামী এই সংশোধন দেখানো হয়েছে মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতির স্থায়িত্ব এবং কর্মী সংকট, বৈদেশিক মুদ্রা ও বিদ্যুত্ স্বল্পতার কারণে। এগুলোর সবই আগের ধারণার চেয়ে (অর্থনৈতিক) কার্যকলাপের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।’ বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদনের বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গৃহযুদ্ধের চাপে নাকাল হচ্ছে মিয়ানমার। দেশটিতে বেশ কয়েকটি নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু জাতিগুলোর প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনী জান্তা বাহিনীগুলোকে পিছু হটিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে লড়াইয়ের কারণে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসব কারণে দেশটির দারিদ্র্যের হার ২০১৫ সালের স্তর ৩২ দশমিক ১ শতাংশে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
ব্যাংকটি বলেছে, ‘২০২৩-২৪-এ দারিদ্রের গভীরতা ও তীব্রতা আরো খারাপ হয়েছে, এর অর্থ গত ছয় বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় দেশটিতে দারিদ্র্য আরো গেড়ে বসেছে।’ তাদের শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের মুখে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা চলতি বছরের প্রথমদিকে তাদের ক্ষয় হওয়া সামরিক জনবল পূরণের জন্য নিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এই ঘোষণার পর শহর থেকে বহু লোক গ্রামীণ এলাকায় চলে গেছে বা বিদেশি পাড়ি জমিয়েছে, ফলে শিল্পক্ষেত্রে শ্রমিকের অভাব দেখা দিচ্ছে বলে ক্রমবর্ধমান প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রতিবেশী চীন ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থল সীমান্তেরও নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে, ফলে স্থল বাণিজ্যও অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি যোগ হয়ে দেশটির দৃশ্যমান অর্থনীতি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে উঠছে বলে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে।
Leave a Reply